“নিজ প্রচেষ্টায়, রিদোয়ানের গ্রাফিক্স জগতে পদার্পণ”
কথায় আছে,যিনি ইচ্ছা করেন তিনিই পারেন।আমাদের যখন কোনো বিষয় শিখার প্রতি প্রবল ইচ্ছা বা ভালোবাসা থাকে,আমরা তখন নিজ প্রচেষ্টায় ওই বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করি।আমাদের সেই ইচ্ছা বা ভালোবাসার মাঝে যতো বাধা আসুক না কেন আমারা তা আমাদের এই ইচ্ছা শক্তি দ্বারাই এই বাধা পার করে দেই। রিদোয়ান হোসেন রাদিত এমনই একজন ব্যাক্তি যিনি তার প্রবল ইচ্ছাশক্তি দ্বারা নিজ প্রচেষ্টায় গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখেন।তিনি বলেন,আমি আলাদাভাবে গ্রাফিক্স এর কাজ শিখিনি, প্র্যাক্টিস করে শিখেছি।প্র্যাক্টিস করা ইস্টার্ট করি ২০২০ এর লকডাউন এর সময়।তিনি এই কাজ করতে ভালোবাসেন বলেই তার এই কাজের প্রতি এতো আগ্রহ। তিনি এই ২০২০ এর লকডাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইন জগতের অনেকের সাথেই পরিচিত হন যারা অনেকেই পোস্টার, টেম্পলেট এগুলো ডিজাইন করতেন এবং তিনি তাদের কাজ দেখে খুবই অনুপ্রাণিত হন।তিনি ভাবলেন তারা পারলে আমি কেন পারবো না।আর এই ভাবেই গ্রাফিক্স জগতে তার প্রবেশ। তিনি তার পরিবার থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি।উলটো পরিবার থেকে সবচেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হন।কিন্তু বলে না আপনার ইচ্ছা আপনার ভাগ্য স্থির করবে।
তিনি এখন COTM এর মতো একটি সুপরিচিত অনলাইন গ্রুপের গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন।COTM এ কর্মরত অন্যান্য গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এখনো করা হয়নি, কারণ এখনও অনেক কিছু শিখা বাকি। আগে সব শিখি এরপর না হয় পরিকল্পনা করা যাবে।
রিদোয়ান হোসেন রাদিত ভাইয়ার জন্যে রইল অনেক অনেক শুভ কামনা।তিনি যেনো ভবিষ্যতে গ্রাফিক্স ডিজাইনে অনেক বড় কিছু হতে পারেন এবং সিওটিএম কে ভালো ভালো কাজ দিতে পারেন এই প্রত্যাশাই করছি।
-আসমা উল হুসনা পুন্য
“আমরা তরুণ সমাজ গ্রাফিক্সের গুরুত্ব বুঝি”
বাইরের দেশের মতো গ্রাফিক্স ডিজাইনিং,ভিএফএক্স কোর্স না থাকলেও গ্রাফিক্স নিয়ে তরুণ সমাজের আগ্রহের অভাব নেই ।আজ এমনই একজন তরুণের গল্প বলতে যাচ্ছি যিনি মূলত শখের বশেই গ্রাফিক্স নিয়ে আগ্রহ দেখান এবং সেখান থেকেই তার গ্রাফিক্স নিয়ে পথচলা শুরু।
সাইমুন খান অভি; যিনি একজন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী । তার পড়াশোনা হয় চট্টগ্রামের গভর্নমেন্ট সিটি কলেজ থেকে। তিনি বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে ইচ্ছুক। বর্তমানে অনলাইন জগতের বেশ সফল একটি সাংস্কৃতিক ফেইসবুক গ্রুপ COTM ( Castway on The Moon) এর গ্রাফিক্স ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্য। যার নাম আপনারা প্রায় সবাই জানেন। বর্তমানে প্রায় ৪ লাখেরও বেশি মানুষ নিয়ে গ্রুপটি এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রুপগুলির মধ্যে একটি।
২০১৮ সালে তারই এক স্কুলের বন্ধু শিফাউল ইসলামের সাথে তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনিং শিখতে শুরু করেন New horizons Computer learning centare থেকে । তখন থেকেই তার নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে তার ভাল লাগত এবং সেখান থেকেই তার অনুপ্রেরণা যে তিনি নিজের এই সত্তাকে ভবিষ্যতেও ধরে রাখতে চান।
তিনি একজন ব্যবসায় শাখার শিক্ষার্থী এবং তিনি ইতিমধ্যে ইন্টার্নশিপ নিয়ে কাজ করছেন এবং ভবিষ্যতেও তা নিয়েই কাজ করবেন কিন্তু গ্রাফিক্স ডিজাইনিং তার প্যাশন এবং শখ,তাই তিনি ভবিষ্যতেও এটি নিয়ে কাজ করতে চান। ওনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ছবি আঁকা, ফটোগ্রাফি করা, গান করা এগুলো ছেড়ে শুধুই গ্রাফিক্স কেন পছন্দ তার ; জবাবে তিনি বললেন সৃজনশীল এবং দৃষ্টিনন্দন কাজ করতে তার ভালো লাগে মূলত এই থেকেই তার গ্রাফিক্স ডিজাইনিং বেছে নেওয়া। তিনি ছবি তুলতেও ভালোবাসেন এডিটিং করতে ও তার ভালো লাগে । তবে তার ভাষ্যমতে তিনি খুবই বাজে গান করেন তাই কখনো চেষ্টাও করেনি। তিনি কখনো কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেননি তবে 2020 সালে Castway On The Moon গ্রুপের শ্রেষ্ঠ এসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ হয়েছিলেন গ্রাফিক্স ডিপার্টমেন্টে তার অনবদ্য কাজের জন্য।আশা রাখি এই তরুণ ভবিষ্যতে নিজের স্বপ্ন জয় করতে পারবেন এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এ বাংলাদেশকে মর্যাদার সাথে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে পারবেন।
-ওয়ালীউল্লাহ সাইয়ন
” চিত্র বিচিত্রায় পথচলা সাজিমের”
যখন আমরা “গ্রাফিক ডিজাইনার” শিরোনাম শুনি,আমরা একজন ব্যাক্তিকে উজ্জ্বল স্ক্রিনের দিকে তাদের বাঁকানো মাউসটিতে ক্লিক করা বুঝি। একইরকমভাবে এই ক্লিক রঙিন আর্টস,লোগো এবং চিত্র উৎপাদন করে এবং প্রথম নজরে এটি জটিল দেখায় । কিন্তু পরবর্তীতে টা অমাইক রূপ ধারণ করে । গ্রাফিক্স ডিজাইনের এমন অদম্য পথচলায় চলছেন সাজিম রহমান । সাজিম রহমান বর্তমানে স্বনামধন্য মাইলস্টোন কলেজে ১ম বর্ষের ছাত্র । পড়াশুনার পাশপাশি করছেন এখনকার যুগের অন্যতম জনপ্রিয় কাজ গ্রাফিক্স ডিজাইনিং।
সাজিম রহমান , ছোটবেলা থেকেই গ্রাফিক্সের প্রতি অদম্য রোষ এবং পরিবারের আনুকূল্য তাকে সাহায্য করছে তার স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলতে । চার লক্ষের অধিক সদস্য বিশিষ্ট সংগঠন COTM (Castway On The Moon) এ তিনি কাজ করছেন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে। অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও গ্রাফিক্স ডিজাইন কে প্রাধান্য দিয়ে পেশাগতভাবে বেছে নিয়েছেন ।
গ্রাফিক্স ডিজইনার হিসেবে তার পথচলে শুরু হয়েছিল 10MS এর একটি ওয়েবসাইটে সাদমান সাদিকের ভিডিও দেখে । COTM এ কো – অর্ডিনেটর হিসেবে যোগদান করে এখন তিনি COTM এর গ্রাফিক্স টিমের একজন অন্যতম সদস্য । এই সংগঠনের সাথে তার সম্পর্ক আরো নিবিড়ভাবে গড়ে তুলতে চান তিনি।
সাজিম বলেন তার জীবনের সবকাজে তার মা তাকে আগ্রহ দিয়ে গেছেন । তার ভবিষ্যতের পথচলা যেনো সুন্দর এবং অন্যতম হয়ে উঠতে পারে এ ব্যাপারে তার মা সর্বদা তার পাশে আছেন । কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ না করলেও ইভেন্টে তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর কাজ করেছেন । পৃথিবী ঘুরার ইচ্ছা থেকে তিনি ভবিষ্যতে পাইলট হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন ।
COTM নিয়ে সাজিম রহমান বলেন , ” COTM is the galaxy’s most astonishing art platform that ever existed.”
সাজিম রহমান COTM এ গ্রাফিক্স টিমের পক্ষ হতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন । সুতরাং COTM এর প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রতি অদম্য আগ্রহ তার জিবনে সফলতা বয়ে আনুক ।
-নুসরাত জাহান নিতি
” ইহসান হকের গ্রাফিক্স এর যাত্রা”
কথায় আছে “আগ্রহ থাকলে অনেক দূর যাওয়া যায়।” সত্যিই তাই।কিছু কিছু মানুষের জীবন নিয়ে সামান্য পরিমাণে ঘাটলেই সেটা ভালো ভাবে বোঝা যায়। তেমন একজন হলো ঈশান হক। বর্তমানে তিনি Notre dame college এ পড়ালেখা করছেন। কলেজে উঠেই আলাদা টান অনুভব করেন গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রতি।শখের বশে গ্রাফিক্স নিয়ে আগ্রহ দেখেন এবং পথ চলা শুরু হলেও এখনো চলছে সেই পথেই। প্রথমে বন্ধুর ছবির ভেক্টর আর্ট দিয়ে শুরু করেন। তারপর তার আগ্রহ তাকে এগিয়ে নিয়ে যায় আরো সামনে। তিনি বলেন “প্রথমে শখই ছিল; পরে হঠাৎ একদিন you tube এ এক ভিডিও দেখে আপওয়ার্ক আর ফাইভার এ অ্যাকাউন্ট খুলসিলাম, দেন স্পেন এর এক লোক একটা ছোট্ট কাজের মেসেজ দেয়, দেন পুরোদমে কাজ শুরু করে দেই।” এ ছাড়া শখের কথা তুলতেই জানতে পারলাম আর একটি কথা কলিম্বা বাজাতেও ভালোবাসেন তিনি। এছাড়া ওয়েব সাইটও তৈরি করে থাকেন তিনি।তবে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন গ্রাফিক্স ডিজাইন কে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয় তার পথ চলা COTM ( Castaway On The Moon) এর সাথে একজন CA হিসেবে। এরপর নিজের কাজ দিয়ে জায়গা করে নেন COTM এর গ্রাফিক্স ডিপার্টমেন্টে। এছাড়া COTM এ Joint secretary হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ভবিষ্যতে গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে আগাতে চান কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান তার গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে আগানোর চেয়ে অ্যানিমেশন নিয়ে আগানোর ইচ্ছা বেশি ।
এই তরুণের ভবিষ্যৎ পথ চলার জন্য রইলো অনেক শুভ কামনা। তিনি যাতে ভবিষ্যতে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তার স্বপ্ন দর্শি রাস্তায় এই দোয়াই রইলো।
-জাকিয়া সুলতানা
” সিফাউলের গ্রাফিক্স জগতে পদার্পণ “
আর্টের প্রতি তীব্র স্পৃহা আর দক্ষতা দ্বারাই সিফাউলের ডিজিটাল আর্টের জগতে পদার্পণ। ছোট থেকেই আর্টের প্রতি তীব্র ভালোলাগা সিফাউল ইসলামের। বর্তমানে তিনি ভার্সিটি এডমিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং হালিশহর ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছেন।
ছোট থেকেই আর্ট করতেন সিফাউল। তিনি বলেন, ‘ ছোট থেকেই আমার আর্ট অনেক ভালো লাগতো আর এনিমে ফ্যান ছিলাম। বিভিন্ন গ্রুপে দেখতাম সবাই এনিমে আর্ট করত। ওখান থেকে আমারো ইচ্ছা জাগে এবং আমিও চেষ্টা করি , এভাবেই শুরু করি আর্ট। ‘
৯ম-১০ম শ্রেণি থেকেই গ্রাফিক্স আর্ট, এনিমে আর্ট এবং এনিমে মিউজিক ভিডিও বানানো শুরু করেন।এনিমে মিউজিক ভিডিও কম্পিটিশনে পার্টিসিপেট করে পুরুস্কৃত ও হয়েছেন সিফাউল।
সাধারণত মোশন গ্রাফিক্স করতেই বেশি পছন্দ করেন সিফাউল। ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেইজ ও আছে সিফাউলের ‘ Sifaul AMV ‘ নামে,যেখানে তিনি নিয়মিত গ্রাফিক্স আর্ট টিউটোরিয়াল এবং নতুন নতুন গ্রাফিক্স আর্ট পোস্ট করে থাকেন। এছাড়াও বর্তমানে তিনি বিভিন্ন পেইড আর্ট ওয়ার্ক করে থাকেন।
শখ থেকে শুরু হলেও নিজের আর্টকে ভবিষ্যতে প্রফেশনাল ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান সিফাউল । গ্রাফিক্স ডিজাইনের আইডিয়া থেকে গেম ডেভেলপার হওয়ার এবং গেম বানানোর ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে।
এতো শিল্প থাকতে ডিজিটাল আর্টকেই কেনো বেছে নিয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে সিফাউল বলেন, ‘ ডিজিটাল আর্টের পাশাপাশি আমি গান এবং স্কেচিং ও করি। আমার নিউ ক্রিয়েটিভ জিনিস ট্রাই করতে ভালো লাগে। কিন্তু গ্রাফিক্স আর্টের সাহায্যে আমি আমার আইডিয়া গুলোকে ভিজুয়ালি রিপ্রেজেন্ট করতে পারি তাই গ্রাফিক্স আর্টকেই চুজ করেছি আমি। ‘
অবশেষে নতুনদের উদ্দেশ্যে সিফাউল বলেন, ‘ সবসময় নতুন নতুন চিন্তা করতে হবে এবং সেই চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে, মনে রাখতে হবে ভুল থেকেই মানুষ শিখে, তাই সব রকম ডিজাইন চেষ্টা করে যেতে হবে। অন্যদের দেখে চেষ্টা করতে হবে কিন্তু সবসময় খেয়াল রাখতে হবে আর্টের আইডিয়া টা যেনো সম্পূর্ণ নিজের হয়। ‘
সিফাউলের উদ্দেশ্য তিনি যেনো এই শখের জায়গা থেকে শুরু হওয়া শিল্পটিকে ভবিষ্যতে আরো উন্নত করতে পারেন এবং একজন প্রফেশনাল গেম ডেভেলপার & গেম ক্রিয়েটর হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে পারেন। নিজের এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য তিনি প্রতিনিয়ত অনুশীলন করে যাচ্ছেন। সিফাউলের স্বপ্ন পূরনের পথচলায় জানাই অনেক শুভকামনা।
-তিয়াসা হাসান
সবার জন্য শুভ কামনা ও ভালোবাসা রইলো।
খুবই অনুপ্রাণিত হলাম,,,সবার জন্য শুভকামনা রইলো।