দৃঢ় মনোবল ও ইচ্ছাশক্তি নিয়ে অর্থীর স্বপ্ন পূরণের পথচলা
|| তিয়াসা হাসান ||
‘দৃঢ় মনোবল মানুষকে প্রতি মুহূর্তে অনুপ্রাণিত করে স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে। এই তীব্র মনোবল নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া এক অসাধারণ ব্যক্তিত্বের কথাই বলছি আজ। পারিসা ইসলাম অর্থী, বর্তমানে এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে সাইবার সিকিউরিটিতে বিএসসি অনার্স করছেন।
অর্থী ক্যাস্টাওয়ে অন দ্যা মুন গ্রুপের অরগানাইজিং প্যানেলের এক অন্যতম সদস্য। COTM এর সাথে যাত্রা শুরু করেন প্রায় ১ বছর আগে। COTM এ একজন অরগানাইজিং প্যানেল মেম্বার হিসেবে তার অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, তিনি এই গ্রুপকে এবং গ্রুপের মানুষগুলোকে অনেক ভালোবাসেন, গ্রুপের সব ট্যালেন্টেড মানুষগুলোর মাঝে থেকে কাজ করতে পেরে তিনি অনেক গর্বিত ও আনন্দিত। তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতেও গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকার ইচ্ছা আছে।”
COTM এর হাজারও শিল্পীর মতো পড়াশোনার বাইরেও অর্থীর কিছু শখ আছে, গান করা ও ইউটিউবে ব্লগিং করা। গানের প্রতি প্রবল ঝোঁক অর্থীর ছোটোবেলা থেকেই। বড়ো ভাইয়ের গান শেখা দেখে অর্থীরও ইচ্ছে হয় গান শেখার। এভাবেই গানের জগতে অর্থীর পদার্পণ । বিভিন্ন গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অনেকবার পুরস্কৃত হয়েছেন অর্থী। তিনি আনন্দের সাথে জানান, গত ইদে কলকাতার রূপঙ্কর বাগচীর সাথে তার নতুন একটি গান রিলিজ হয়েছে।গানের পাশাপাশি অর্থীর ইউটিউবে ব্লগিং করারও শখ রয়েছে। ইন্ডিয়ান ইউটিউবার ‘ Mostlysane ‘-এর থেকে ইন্সপায়ার হয়েই অর্থীর ইউটিউবিং শুরু করা। যদিও অর্থী সাধারণত ফুড ব্লগিং করেন, কিন্তু ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন বিষয়ে ব্লগ করার ইচ্ছা আছে বলে জানান। ভবিষ্যতে গানকে বা ইউটিউবিংকে প্রফেশন হিসেবে নেওয়ার ইচ্ছা আছে কি না জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে গুগলে সাইবার সিকিউরিটি সেক্টরে কাজ করার ইচ্ছা আছে, পাশাপাশি গান ও ইউটিউব নিয়েও কিছু করার ইচ্ছা আছে।”
COTM-এ কাজ করা ভবিষ্যতে তাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারে জিজ্ঞাসা করায় অর্থী বলেন, “ভবিষ্যতের প্রতিটি ধাপে COTM-এ কাজ করার এক্সপিরিয়েন্স আমাকে সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি।” অর্থীর এই স্বপ্ন পূরণের দৃঢ় মনোবল ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। অর্থীর ভবিষ্যতের স্বপ্ন পূরণের পথচলায় জানাই অনেক শুভকামনা।

প্যাশন যখন হয়ে ওঠে প্রফেশন
|| মাহজাবিন রহমান মৌমিতা ||
সব মানুষের কিছু না কিছু প্রতিভা থাকে। কেউ সবকিছুতে পারদর্শী হতে পারে না। নিজের লুকোনো প্রতিভাকে নিজেরই খুঁজে নিতে হয়। প্রতিভা এমন একটি জিনিস যে, কেউ কারোর কাছ থেকে চাইলেই ছিনিয়ে নিতে পারে না।সবার উচিত নিজের প্রতিভাকে খুঁজে বের করে সেই প্রতিভাকে নিয়ে কাজ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। তেমনি একজন মানুষ মুগ্ধ, সে নিজের প্রতিভাকে নিয়ে বহুদূর এগিয়ে যেতে চায়।
মুগ্ধ রায়। সরকারি সুন্দরবন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। মুগ্ধের রয়েছে অনেক প্রতিভা। তার সবচেয়ে বিশেষ প্রতিভা হলো অনেক সুন্দর কার্টুন আঁকতে পারা। সে একজন কার্টুনিস্ট। তিন বছর ধরে মুগ্ধ কার্টুনিং করছে। মূলত শখের বশেই শুরু করে কার্টুনিং করা। ছোটোবেলায় মুগ্ধও সবার মতো ঘর বাড়ি আঁকত। আস্তে আস্তে অনেক ভালো ছবি আঁকা শুরু করে। আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল যে, সে বড়ো হয়ে কার্টুন আঁকবে। আর ছোটোবেলায় সাধারণত সব বাচ্চারাই কার্টুন আঁকতে পছন্দ করে। তাদের খাতা পেনসিল দিয়ে বসিয়ে দিলে আর কিছু আঁকুক না না-আঁকুক, কার্টুন নিশ্চয়ই আঁকবে। একদিন মুগ্ধর বাবা মুগ্ধকে তার বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। আর তার বাবার বন্ধুর ছেলে হলো বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কার্টুনিস্টদের মধ্যে একজন। নাম তার আসিফুর রহমান। আসিফুর রহমানকে দেখেই মুগ্ধর কার্টুনিস্ট হওয়ার ইচ্ছা জাগে। তখন থেকেই মূলত সে কার্টুন, ক্যারিকেচার, কমিকস এসবের ব্যাসিক শেখা শুরু করে। আর এখনও শিখে যাচ্ছে। মুগ্ধ অনেকের সাথে কাজ করেছে এখন পর্যন্ত। উন্মাদের জন্য কার্টুন এঁকেছে। কিশোর আলোর জন্যও একবার এঁকেছিল। কিন্তু তার মতে এখনো সে ভালোভাবে শিখে উঠতে পারেনি দেখে কাউকে সে অ্যাপ্রোচও করেনি।তাও সাহস করে এ-বছর কমিকসের জন্য কাজ করছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রফেশনালি কার্টুনিং শুরু করে মুগ্ধ। কিন্তু সে প্যাশন থেকেই শুরু করে কার্টুনিং করা।এখন প্যাশন থেকেই কার্টুনিং মুগ্ধর প্রফেশন হয়ে গিয়েছে।কারণ এর মাধ্যমে এখন সে অর্থ উপার্জন শুরু করেছে। মুগ্ধ বলে, সে যদি কার্টুনিস্ট না হতো, হয়তো অ্যাক্টিং করতো, সিনেমা করতো বা হিরো হতো। মজা করেই বলেছিল এ কথা। মুগ্ধ বাংলাদেশ 2D অ্যানিমেশনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।যদি সবকিছু ঠিক থাকে অ্যানিমেশন সেক্টরে চলে যাবে।তাছাড়া মুগ্ধ গান গায়। অবসর সময়ে আঁকাআঁকি করে মুগ্ধ নিজের স্বস্তির জন্য।
যারা নিউ কার্টুনিস্ট তাদের উদ্দেশ্যে মুগ্ধ বলল, তাদের সময়নিষ্ঠ হতে হবে। অল্প সময়ে কোনো কিছু পাওয়া যায় না।সময় নিয়ে কাজ করতে হবে। আর যারা কার্টুনিস্ট হতে চায়, তাদের ব্যাসিক ভালোভাবে শিখতে হবে। বেশি বেশি আঁকতে হবে। শীর্ষস্থানীয় কার্টুনিস্টদের অনুসরণ করতে হবে।
মুগ্ধ প্রায় এক বছর ধরে সিওটিএমের সাথে আছে।সিওটিএমের অর্গানাইজিং প্যানেলের একজন সদস্য মুগ্ধ।আমাদের ক্যাস্টাওয়ে অন দ্যা মুন এর পক্ষ থেকে মুগ্ধর জন্য রইল শুভকামনা।

সেতার ও সামিন: একে অপরের পরিপূরক
|| মোমিনুর হক সিয়াম ||
“তলোয়ার দিয়ে রাজ্য জয় করা যায়, তেমনি সংগীত দিয়ে শত্রুকে বন্ধু করা যায়।” ফারসি সাহিত্যে এই জনপ্রিয় উক্তিটির বাস্তব জীবনের সাথে পুরো মিল রয়েছে, কারণ জীবন এবং সংগীত ওতপ্রোতভাবে জড়িত, আর সংগীতের মাঝে মানুষ বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পায়।
সামিন ইয়াসার ইফতি, ২০২০-এ এইচএসসি পাশ করে বর্তমানে ইউনিভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের অনলাইন জগতের বেশ সফল একটি সাংস্কৃতিক ফেসবুক গ্রুপ ‘ক্যাস্টাওয়ে অন দ্যা মুন’ বা ‘সিওটিএম’-এর অর্গানাইজিং প্যানেলের একজন সদস্য। মূলত গান এবং সেতারের সাথেই বন্ধুত্ব তার। তাছাড়া বন্ধুত্ব হবে না-ইবা কেন? তার পরিবারও গানের সাথে সম্পৃক্ত। তার সংগীতযাত্রা সম্পর্কে জেনে যে-কেউই অভিভূত এবং অনুপ্রাণিত হবে। তার সম্পর্কে কিছু তথ্য:
•সেতার কি আপনার শখ নাকি আপনি প্রফেশন?
>গান এবং সেতার পুরোটাই আমার শখের বসে শেখা।
•কার কাছ থেকে বা কীভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন?
>ছোটো থেকে দেখেছি আমার পরিবারের সবাই গান বাজনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল, তাই প্রথম ইন্সপিরেশন বাবা এবং মা।
•গান এবং সেতার নিয়ে আপনার যাত্রা এবং অভিজ্ঞতা?
>আমি গান শিখেছি আমার মায়ের কাছে, গিটার আমার বাবার কাছে এবং সেতার আমার গুরু পণ্ডিত কুশল দাসজির কাছে শেখা। মিউজিক আমাকে অনেক অনেক গুণী মিউজিশিয়ানদের সাথে পরিচয় করিয়েছে, তাদের থেকে শেখার সুযোগ করে দিয়েছে, এটাই আমার সবচেয়ে মূল্যবান অভিজ্ঞতা।
•গান নিয়ে আপনার ফিউচার প্ল্যান কী?
>ভবিষ্যতে ইচ্ছা আছে নিজের কয়েকটা গান থাকবে, যেখানে আমি নিজে সুর করবো, গান গাইবো, ইন্সট্রুমেন্ট বাজাবো।
•আপনি চাইলে তো অন্য কিছুও করতে পারতেন, কিন্তু এসব বাদ দিয়ে সেতারের সাথেই বন্ধুত্বকে কেন বেছে নিলেন?
>আমি বিশ্বাস করি, সবারই নির্দিষ্ট কিছু প্রতিভা থাকে, যা তাদের সবার থেকে আলাদা করে এবং তারা সেটা করে আনন্দ পায়, আমার কাছে মিউজিকটা তেমনি।
•কোনো প্রতিযোগিতায় কি পুরস্কৃত হয়েছেন?
>পুরস্কৃত হইনি, তবে সেতার বাজনার জন্য দৈনিক প্রথম আলো, The Daily Star এবং The Daily Sun এ আমার দলীয় গ্রুপ ছবি প্রকাশিত হয়েছিল।
•অবসর সময়ে কী কী করেন?
>অবসর সময়ে গান শোনা হয়, সিনেমা দেখা হয় ইত্যাদি।
•সাপোর্ট পেয়েছেন কেমন?
>অনেক সাপোর্ট পেয়েছি পরিবার থেকে, যেহেতু তারাও গান ভালোবাসেন।
তাকে সবার উদ্দেশ্যে কোনো উপদেশ বা কিছু বলতে বলায় তার উত্তর ছিল একদমই অভূতপূর্ব এবং অন্যরকম। তার মতে, উপদেশ দেওয়ার মতো অবস্থায় এখনো তিনি আসেননি। তবে সবাই যেই সেক্টরেই ট্যালেন্টেড থাকুক না কেন, তাকে সেই ট্যালেন্টকে ভালোবাসতে হবে এবং চর্চা করতে হবে।

পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে নিজেকে এ অবস্থানে দেখতে চাইলে করণীয়:
১. সিওটিএম গ্রুপে সপ্তাহজুড়ে আপনার বেস্ট আর্টওয়ার্কগুলো পোস্ট করতে হবে। ২. ক্যাপশনে আপনার পরিচিত নূন্যতম ৫জন বন্ধুকে মেনশন করার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ এক্সপ্ট করার জন্য নমিনেট করতে হবে।৩. ক্যাপশনে অবশ্যই #cotmofficials হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় আপনি এই চ্যালেঞ্জের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবেন না।