গতকাল তালা উপজেলা হাসপাতালে দুইজন চিকিৎসকসহ কয়েকজন নার্স, স্টাফ নির্মমভাবে রোগীর স্বজনের হাতে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন। ঘটনার সূত্রপাত বিকালে এক প্রসূতির জরুরি সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে। রোগিটির সার্বিক অবস্থা ঝঁকিপূর্ণ থাকায় রোগীর স্বজনদের বারবার অবহিত করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন মর্মে লিখিত অনুমতি পত্র নেওয়া হয়। ওটিতে অপারেশন শুরুর আগেই রোগির অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে থাকায় এবং উপস্থিত চিকিৎসকবৃন্দ রোগীর অবস্থার উন্নতি করতে না পারায় রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা কিংবা খুলনা মেডিকেলে রেফার করার প্রস্তাব দেন রোগীর স্বজনদের। সেই মোতাবেক এ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা করা হয়। রোগীকে কেনো রেফার করা হচ্ছে এই অজুহাত দেখিয়ে হঠাৎই রোগীর স্বজন পরিচয়ে দুই যুবক অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে প্রবেশ করে কর্তব্যরত দুই জন চিকিৎসক, নার্স, স্টাফদের বেধড়ক মারধর শুরু করেন, অথচ চিকিৎসক এবং অন্যান্যরা তখনও রোগীকে ওটির টেবিলে জীবন বাচাঁনোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় দশ-পনেরো মিনিটের এই তান্ডবের কারনে অপারেশন থিয়েটারের ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে, পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং চিকিৎসকবৃন্দ রুগির চিকিৎসা দিতে বাধাপ্রাপ্ত হন। তারপরও শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিধ্বস্ত স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দ রোগীর চিকিৎসা চালিয়ে যান এবং পরবর্তীতে রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনার উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন।রাতে উক্ত রোগীর মৃত্যুর সংবাদ আসায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি হয়।
সাতক্ষীরা জেলা বিএমএ-র পক্ষ থেকে একটি সরকারি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের ভিতর ঢুকে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মিদের শারীরিক ভাবে লান্চিত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজের সার্জিকাল অনকোলজির এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. মোঃ মনোয়ার হোসেন। সাথে সাথে এই ধরনের হীন কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছেন হাসপাতালে কর্মরত সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য প্রশাসনের নিকট আবেদন জানিয়েছেন তারা।