মন খারাপের একটা খবর শোনালেন ক্রিকেটার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি অভিযোগ করেছেন এসএ পরিবহন (ফেনী শাখা) থেকে রাজশাহীতে দুটি ব্যাট কুরিয়ারে পাঠানোর সময় তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেসবুকে ভাঙা ব্যাটের ছবিও পোস্ট করেন তিনি। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, এ ঘটনায় কোনো দায় নিতে নারাজ এস এ পরিবহন।
এবার ‘ইউনাইটেড ব্রেকস গিটার’-এর গল্পটা শুনে আসি,
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স আমেরিকার একটি অন্যতম বড়ো এয়ারলাইন্স কোম্পানি। সম্প্রতি তারা আলোচনায় উঠে এসেছে ডেভ ক্যারল নামে এক গায়কের গিটার ভেঙে ফেলার কারণে।
কানাডিয়ান গায়ক ডেভ ক্যারল গত বছর ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিমানে করে যাওয়ার সময় তার গিটারটি তিনি বাক্সে ভরে বিমানের লাগেজে দিয়েছিলেন। প্লেনের কর্মীরা গিটারটি উঠানো নামানোর এক পর্যায়ে এটি ভেঙে ফেলেন।
গায়ক ডেভ ক্যারল এই ঘটনার জন্য ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কোম্পানির কাছে গিটার সারানোর জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। কিন্তু ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স তাঁকে নানা অজুহাতে অনেকদিন ঘোরানোর পরে বিভিন্ন নিয়মকানুন দেখিয়ে এ ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করে।
কোনো ক্ষতিপূরণ না পেয়ে মনের দুঃখে ডেভ ক্যারল একটি গান রচনা করেন, ‘ইউনাইটেড ব্রেকস গিটারস’। ব্যান্ড বন্ধুদের নিয়ে গানটি গাওয়ার পরে তিনি তা ইউটিউবে প্রকাশ করেন এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ইউটিউবের মাধ্যমে সেটা একটা হিট গানে রূপান্তরিত হয়। কয়েক মিলিয়ন মানুষ এ গান উপভোগ করে।
ইউটিউবে প্রচারে এ সাফল্যের পর বহু টিভি কোম্পানি এ বিষয়টা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে। গানটির সাফল্যের ফলে বিভিন্ন চ্যানেলে এ বিষয়ে ডেভ ক্যারলের বেশ কয়েকটা সাক্ষাৎকারও প্রচারিত হয়।
ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স অবশেষে বুঝতে পারে যে, এ ঘটনার ফলে তাদের কোম্পানির বদনাম হচ্ছে। এর পর তারা ডেভ ক্যারলের সাথে আবার যোগাযোগ করে এবং তার গিটারের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়।
কিন্তু ততদিনে ডেভ ক্যারলের এই গানটি জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে। এই গানটির কারণে তিনি দর্শকদের কাছে আগের চেয়ে আরও অনেকখানি পরিচিতি পেয়ে গেছেন। বহু টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাই ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব এবার তিনি ফিরিয়ে দেন। তিনি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে এ গায়ক জানান, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এ টাকাটা কোনো চ্যারিটিতে দান করতে পারে। তিনি আরো জানান, কদিন পরেই তার এ গানটির দ্বিতীয় পর্ব আসছে।
এদিকে এই গানের কারনে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের সেবার মান সম্বন্ধে মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়। ফলে কোম্পানির যাত্রী কমে যাবে বলে ধারণা করা হয়। এর ফলে গত কয়েক দিনে কোম্পানির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমে গেছে। এখন পর্যন্ত আর্থিক মূল্যে কোম্পানির এ ক্ষতির পরিমাণ ১৮০ মিলিয়ন ডলার।
শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সেই ১৮০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে ডেভ ক্যারলের ব্যবহৃত মডেলের ৫১,০০০টি গিটার কেনা সম্ভব। সময়মতো ক্ষতিপূরণ না দিয়ে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কী ভুলটাই না করলো!